টার্কি খামাড়




টার্কির (Turkey) প্রজাতিগুলি:

১) ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ

পালকের মূল রং কালো, তামাটে নয়৷ মাদী পাখির বুকের পালকের রং কালো, ও তার ডগাগুলি সাদা হয়, যার দরুন মাত্র ১২ সপ্তাহ বয়সেই লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়৷

২) ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট:

এটি ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ ও হোয়াইট হল্যাণ্ডের সংকর যার পালকগুলি সাদা হয়৷ সাদা পালকের টার্কির গরম সহ্য করার ক্ষমতা বেশি ও সেই সঙ্গে পালক ছাড়ানোর পরে এদের পরিষ্কার ও ভাল দেখায়৷

৩) বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট:

এটি রং ও আকারে ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট প্রজাতির খুবই কাছাকাছি তবে আয়তনে ছোট৷ ভারী প্রজাতিগুলির তুলনায় এদের ডিম দেওয়া, উর্বরতা ও ডিম ফোটার পরিমাণ বেশী হয় এবং ডিমে তা দেওয়ার ঝোঁক কম হয়৷

৪) নন্দনম টার্কি 

নন্দনম টার্কি – প্রজাতিটি কালো দেশী প্রজাতি ও বিদেশী বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট প্রজাতির শংকর৷

টার্কির (Turkey) খাবার দেওয়ার পদ্ধতিগুলি :

  1. মুরগীর তুলনায় টার্কির শক্তি, প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি৷
  2. যেহেতু পুরুষ ও মাদীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির(এনার্জি) পরিমাণ আলাদা, তাই ভাল ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথক ভাবে পালন করতে হবে৷
  3. খাবার ফীডারে দিতে হবে, মাটিতে নয়৷
  4. যখনই এক রকম খাবার থেকে অন্য খাবারে পরিবর্তন করা হবে তা যেন আস্তে আস্তে করা হয়৷
  5. টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার জলের জোগান দরকার হয়৷
  6. গ্রীষ্মকালে আরও বেশী সংখ্যায় ওয়াটারার রাখুন৷
  7. গ্রীষ্মকালে দিনের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা সময়ে টার্কিদের খাবার দিন৷
  8. পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে 30-40 গ্রা. হারে ঝিনুকের খোলার গুঁড়ো দিন ৷

সবুজ খাদ্য:

নিবিড় পদ্ধতিতে, ড্রাই ম্যাশ হিসাবে মোট খাদ্যের 50% পর্যন্ত সবুজ খাবার দেওয়া যায়৷ সব বয়সের টার্কির জন্য টাটকা লুসার্ন প্রথম শ্রেণীর সবুজ খাদ্য৷ এছাড়া খাবারের খরচ কম করার জন্য ডেসম্যান্থাস ও স্টাইলো কুচি করে টার্কিদের খাওয়ান যেতে পারে৷
.........................................................................................................

মাংস উৎপাদনের জন্য টার্কির সাতটি আদর্শ জাত রয়েছে। পাখিজাতীয় মাংস উৎসের মধ্যে মুরগি, হাঁস, তিতির, কোয়েলের পর টার্কি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। টার্কির মাংস অন্যান্য পাখির মাংস থেকে কম চর্বিযুক্ত, তাই অন্যান্য পাখির চেয়ে টার্কির মাংস অধিক পুষ্টিকর।পশ্চিমা দেশগুলোতে টার্কি অধিক জনপ্রিয়। সবচেয়ে বেশি টার্কি পালন করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্যসহ প্রভৃতি দেশে। আমাদের দেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে যে কোন পশু পাখি পালন অন্য দেশের তুলনায় সহজ , আবার কিছু প্রাণী আছে যারা দ্রুত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে , আর টার্কি পাখি সে রকম একটি সহনশীল জাত , যে কোন পরিবেশ দ্রুত সে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।

ঢাকাতে আমরাই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে টার্কি এবং তিতির মুরগীর খামার শুরু করেছি।
আমাদের কাছে বর্তমানে ১ মাস থেকে শুরু করে ৩/৪ মাস বয়সের টার্কি সাদা ও কালো রংয়ের উন্নতজাতের টার্কি পাওয়া যাচ্ছে....রানিং পেয়ার টার্কি নব্য এডাল্ট টার্কি পাওয়া যাচ্ছে.....

টার্কি মুরগীর ও তিতিরের খামার করতে আগ্রহিরা এই বিষয়ক সকলকিছু বিস্তারিত জানতে 01972221234 নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রয়োজনে আমাদের টার্কি ও তিতিতের খামার টি দেখে যেতে পারেন। প্রতি শুক্রবার টার্কি পালন পদ্ধতি বুঝতে আমাদের খামারটি পরিদর্শন করতে পারেন। যারা টার্কি খামার করতে চান তাদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে আজ এই পর্যন্ত।

টার্কির বাচ্চা পালন :-

টার্কির ০-৪ সপ্তাহ বয়সকে ব্রীডিং পিরিয়ড বলা হয়৷ তবে শীতকালে ব্রীডিং পিরিয়ড বাড়িয়ে ৫-৬ সপ্তাহ করা হয়ে থাকে৷ সাধারণভাবে মুরগীর তুলনায় টার্কির দ্বিগুণ হোভারের জায়গা লাগে৷ এক দিন বয়সের শাবকদের ব্রুডিঙের জন্য অবলোহিত আলোর বাল্ব বা গ্যাস ব্রুডার ও চিরাচরিত ব্রীডিং ব্যবস্থা ব্যবহার করা যায়৷

  1. ০-৪ সপ্তাহের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার মাপ পাখী প্রতি ১.৫ ব.ফু.৷
  2. শাবক এসে পৌঁছোনোর অন্তত দু দিন আগে ব্রীডার হাউস তৈরী রাখতে হবে
  3. ২ মিটার ব্যাস জুড়ে গোলাকারে লিটার বিছিয়ে রাখতে হবে৷
  4. শাবকরা যাতে তাপের উত্স থেকে দূরে চলে না যায় তাই অন্তত ১ ফুট উচ্চতার একটি বেড়া রাখতে হবে
  5. প্রারম্ভিক তাপমাত্রা ৯৫০ফা. রাখতে হবে যা প্রতি সপ্তাহে ৫০ ফা. করে কমাতে হবে যতদিন না শাবকদের বয়স ৪ সপ্তাহ হয়
  6. অগভীর জলপাত্র ব্যবহার করতে হবে৷

প্রথম চার সপ্তাহে গড় মৃত্যুহার থাকে ৬-১০% ৷ শাবকরা স্বভাবতঃই জন্মের পরে প্রথম কয়েকদিন কিছু খেতে বা পান করতে চায় না, মূলতঃ খারাপ দৃষ্টিশক্তি ও ভয় পাওয়ার কারণে৷ এইজন্য, তাদের জোর করে খাওয়াতে হয়৷

জোর করে খাওয়ান:

শাবকদের অল্প দিনের মধ্যে মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ অভুক্ত থাকা৷ তাই খাদ্য ও জল সরবরাহের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে৷ জোর করে খাওয়ানর ক্ষেত্রে প্রতি লিটার জলে ১০০ মিলি হারে দুধ মিশিয়ে খাওয়াতে হবে এবং পনেরো দিন পর্যন্ত প্রতি ১০টি শাবকের জন্য একটি ডিম সিদ্ধ দিতে হবে৷ এটি শাবকদের প্রোটিন ও এনার্জির প্রয়োজন মেটাবে৷
খাবারের পাত্রটিকে আলতো করে আঙুল দিয়ে ঠুকে শাবকদের খাবারের দিকে আকৃষ্ট করা যেতে পারে৷ ফীডার এবং ওয়াটারারে রঙিন মার্বেল বা নুড়িপাথর রাখলেও শাবকেরা সেদিকে আকর্ষিত হবে৷ যেহেতু টার্কিরা সবুজ শাকপাতা ভালবাসে, তাই খাদ্যগ্রহণের পরিমাণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কিছু কুচোন সবুজ পাতাও খাবারে মেশাতে হবে৷ এই সঙ্গে প্রথম ২ দিন রঙীন ডিমের পাত্রকেও ফীডার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে৷
আমাদের কাছে বর্তমানে ১ মাস থেকে শুরু করে ৩/৪ মাস বয়সের টার্কি সাদা ও কালো রংয়ের উন্নতজাতের টার্কি পাওয়া যাচ্ছে....
রানিং পেয়ার টার্কি নব্য এডাল্ট টার্কি পাওয়া যাচ্ছে.....

টার্কি পালনের সুবিধাসমুহ ---


  1. মাংস উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাপক ।
  2. এটা ঝামেলাহীন ভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় ।
  3. টার্কি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে ।
  4. টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ অনেক কম, কারন এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি ঘাস,লতাপাতা খেতেও পছন্দ করে ।
  5. টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির শোভা বর্ধন করে ।
  6. টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশী, চর্বি কম । তাই গরু কিংবা খাসীর মাংসের বিকল্প হতে পারে ।
  7. টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, বি৬ ও ফসফরাস থাকে । এ উপাদান গুলো মানব শরীরের জন্য ভিষণ উপকারী । এবং নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায় ।
  8. টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ও ট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
  9. টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিক পরিমাণে থাকে ।

টার্কি পালনের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট ----


  1. ডিম দেয়া শুরুর বয়স = ৩০ সপ্তাহ ।
  2. পরুষ ও স্ত্রীর অনুপাত = ১ :৫।
  3. বসরে গড় ডিম = ৮০ – ১০০ টি ।
  4. ডিম ফুটে বাচ্চা বেড় হয় = ২৮ দিনে ।
  5. ২০ সপ্তাহে গড় ওজন পুরুষ পাখী = ৭ – ৮ কেজি ।
  6. স্ত্রী পাখী = ৪ – ৫ কেজি ।
  7. বাজারজাত করনের সঠিক সময় পুরুষ = ১৪ – ১৫ সপ্তাহ ।
  8. স্ত্রী পাখী = ১৭ – ১৮ সপ্তাহ ।
  9. উপযুক্ত ওজন পুরুষ পাখী = ৮ – ১০ কেজি ।
  10. স্ত্রী পাখী = ৫ – ৬ কেজি ।

ডিম উৎপাদন –

সাধারণত ৩০ সপ্তাহ বয়স থেকে টার্কি ডিম দেয়া শুরু করে । প্রয়োজনীয় আলো বাতাস, পরিষ্কার পানি এবং খাবার সরবরাহ করা হলে বসরে ৮০ – ১০০ ডিম দিয়ে থাকে । ৬০ – ৭০ শতাংশ টার্কি মুরগী বিকেল বেলায় ডিম দেয় ।

মাংস উৎপাদন –

টার্কি দ্রুত মাংস উৎপাদনশীল একটি পাখী । দেশী হাস – মুরগীর মত সাধারন নিয়মে পালন করলেও ২৮ -৩০ সপ্তাহে প্রতিটি গড়ে ৫-৬ কেজি ওজন হয় ।

টার্কি পালন পদ্ধতি –

মুক্ত অবস্থায় ও আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায় ।

লিটার ব্যাবস্থাপনা ঃ

এই পদ্ধতিতে টার্কির জন্য সহজলভ্য দ্রব্য ব্যাবহার করা যায় । যেমন নারিকেলের ছোবড়া, কাঠের গুরা, তুষ, বালি । প্রথমে ২ ইঞ্চি পুরু লিটার তৈরি করতে হয় । পরে আস্তে আস্তে আরো উপাদান যোগ করে ৩ - ৪ ইঞ্চি করলে ভালো হয় । লিটারে সব সময় শুকনো দ্রব্য ব্যাবহার করতে হবে । ভিজা লিটার তুলে সেখানে আবার শুকনো লিটার দিয়ে পূর্ণ করতে হবে ।

* খাবার –

টার্কির খাবার সরবরাহের জন্য দুইটি পদ্ধতি ব্যাবহার করা যায় । যেমন ম্যাশ ফিডিং ও পিলেট ফিডিং ।
একটি আদর্শ খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হলো –
ধান --------------- ২০%
গম ---------------- ২০%
ভুট্টা --------------- ২৫%
সয়াবিন মিল ------- ১০%
ঘাসের বীজ -------- ৮%
সূর্যমুখী বীজ ------- ১০%
ঝিনুক গুড়া -------- ৭%
মোট = ১০০%

* সতর্কতা –

অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির জন্য বেশী ভিটামিন, প্রোটিন, আমিষ, মিনারেলস দিতে হয় । কোন ভাবেই মাটিতে খাবার সরবরাহ করা যাবে না । সব সময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে ।

* সবুজ খাবার –

সব সময় মোট খাবারের সঙ্গে ৫০% সবুজ ঘাস খেতে দিলে ভালো । সে ক্ষেত্রে নরম জাতীয় যে কোন ঘাস হতে হবে । যেমন – কলমি, হেলেঞ্চা ইত্যাদি । একটি পূর্ণ বয়স্ক টার্কির দিনে ১৪০ – ১৫০ গ্রাম খাবার দরকার হয় । যেখানে ৪৪০০ – ৪৫০০ ক্যালোরি নিশ্চিত করতে হবে ।

* প্রজনন ব্যাবস্থা –

একটি টার্কি মুরগীর জন্য ৪ – ৫ বর্গ ফুট জায়গা নিশ্চিত করতে হবে । ঘরে পর্যাপ্ত আলো ও বাতাসের ব্যাবস্থা থাকতে হবে । ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । একটি মোরগের সঙ্গে ৩ বা ৪ টি মুরগী রাখা যেতে পারে । ডিম সংগ্রহ করে আলাদা জায়গায় রখতে হবে । ডিম প্রদান কালীন সময়ে টার্কিকে আদর্শ খাবার এবং বেশী পানি দিতে হবে ।

* বাচ্চা ফুটানো –

টার্কি নিজেই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় । তবে দেশী মুরগী অথবা ইনকিউবেটর দিয়ে বাচ্চা ফুটালে ফল ভালো পাওয়া যায় । তাছাড়া বাচ্চা উৎপাদনের জন্য সময় নষ্ট না হওয়ার কারণে টার্কিও ডিম উৎপাদন বেশী করে ।

* রোগ বালাই –

পক্স, সালমোনেলোসিস, কলেরা , মাইটস ও এভিয়ান ইনফুলেঞ্জা বেশী দেখা যায় । পরিবেশ ও খমার অব্যাবস্থাপনার কারণে অনেক রোগ সংক্রমণ হতে পারে ।

* টিকা প্রদান----

১ম দিন ---------- এন ডি ( বি১ স্টেরেইন ) ।
৪ ও ৫ সপ্তাহে ---- ফাউল পক্স ।
৬ সপ্তাহে ---------- এন ডি ।
৮ – ১০ সপ্তাহে –- ফাউল কলেরা ।
যেহেতু আমাদের দেশে মুরগির রানিক্ষেত রোগ হ্য়। তাই রানিক্ষেত রোগের টিকা দিয়ে নিতে পারেন।
সতর্কতাঃ-- কোন অবস্থায় রোগাক্রান্ত পাখিকে টিকা দেয়া যাবে না। টিকা প্রয়োগ করার পূর্বে টিকার গায়ে দেয়া তারিখ দেখে নিবেন। মেয়াদ উরতিন্ন টিকা প্রয়োগ করবেন না ।
এছাড়া নিয়ম মাফিক, পরিচ্ছন্ন খাদ্য ও খামার ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক রোগ – বালাই এড়িয়ে চলা সম্ভব ।

* বাজার সম্ভবনা –


  1. টার্কির মাংস পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হওয়ায় এটি খাদ্য তালিকার একটি আদর্শ মাংস হতে পারে । পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাংসের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে । যাদের অতিরিক্ত চর্বি যুক্ত মাংস খাওয়া নিষেধ অথবা যারা নিজেরাই এড়িয়ে চলেন, কিংবা যারা গরু / খাসীর মাংস খায়না , টার্কি তাদের জন্য হতে পারে প্রিয় একটি বিকল্প । তাছাড়া বিয়ে, বৌ –ভাত, জন্মদিন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাসীর/গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে টার্কির মাংস হতে পারে অতি উৎকৃষ্ট একটি খাবার । এবং গরু / খাসীর তুলনায় খরচ ও হবে কম ।
  2. বানিজ্যিক খামার করলে এবং মাংস হিসেবে উৎপাদন করতে চাইলে ১৪/১৫ সপ্তাহে একটি টার্কির গড় ওজন হবে ৫/৬ কেজি । ৪০০ টাকা কেজি দর হিসেব করলে একটি টার্কির বিক্রয় মুল্য দাঁড়াবে ২০০০/২৫০০ টাকা । ১৪/১৫ সপ্তাহ পালন করতে সর্বচ্চ খরচ পরবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা । তাহলে কম পক্ষে একটি টার্কি থেকে ৫০০ টাকা লাভ করা সম্ভব ।
  3. তবে মাংস হিসেবে বানিজ্যিক খামার গড়ে উঠতে আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে । কারন তাতে বিদেশ থেকে আরো উন্নত জাত সংগ্রহ করতে হবে, অধিক বিনিয়োগ করতে হবে । কিন্তু বর্তমানে ছোট আকারের খামার করার যে চাহিদা দেশ ব্যাপী তৈরি হয়েছে, তাতে আগামী ৩/৪ বসরে কয়েক লাখ টার্কির প্রয়োজন হবে । এবং সে ক্ষেত্রে দাম ও বেশী পাওয়া যাচ্ছে । ৩০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত বয়স ও রং ভেদে টার্কির জোড়া কেনা – বেচা চলছে ।

আপনি কেন টার্কির খামার করবেন ??
• যারা বেকার বসে আছেন * যারা নতুন কিছু শুরু করতে চান * পোল্ট্রি ব্যবসা করে যারা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন এবং আপনার স্থাপনা এখন কোন কাজে আসছে না * যারা কম ঝামেলা পূর্ণ কাজ পছন্দ করেন এবং ভালো আয়ের উৎস খুজছেন * যারা অল্প পুঁজি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা খুজছেন, টার্কির খামার তাদের জন্য আদর্শের । কারন হিসেবে আমার অভিমত – ১। একটি আদর্শ টার্কি খামার করতে খুব বেশী পুঁজির প্রয়োজন হয় না । ২। অন্যান্য পাখীর তুলনায় এর রোগ বালাই কম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে এই খামারে ঝুঁকি অনেক কম । ৩। যেহেতু ৮০% পর্যন্ত ঘাস দেয়া যায়, তাই খবারে খরচ কম । ৪। বাজার চাহিদা প্রচুর । ৫। উচ্চ মুল্য থাকায় খরচের তুলনায় আয় অনেক বেশী ।

* শেষ কথা -----

বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জে অনেক জায়গা অনাবাদী/ পতিত অবস্থায় পরে থাকে । যেখানে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে রয়েছে বভিন্ন ঘাস – লতা । এরকম উন্মুক্ত জায়গা টার্কি পালনের জন্য বেশী উপযোগী ।অন্য দিকে আমদের রয়েছে এক বৃহত্তর বেকার জনগোষ্ঠী । তাই একদিকে অব্যবহৃত জমিকে ব্যবহার এবং বেকার দের জন্য কর্ম সংস্থান, এই দুই এর মাঝে সেতু বন্ধন হতে পারে ছোট একটি টার্কি খামার ।

মিরাজ হোসাইন।(টার্কি মিরাজ)
Miraz Hossain
০১৯৭২২২১২৩৪
উত্তর বাড্ডা,সাতাকুল-ঢাকা।
sharif_miraz@yahoo.com
www.facebook.com/shomihossain
www.facebook.com/titirbd1
স্কাইপি: sharif_miraz

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন