এখানে বর্ণিত অধিকাংশ "সংক্ষেপিত রেওয়ায়েত" সমূহ মুন্তাখাব হাদিস থেকে নেয়া হয়েছে। যা মুসলিম বিশ্বের একটি অতি সুপরিচিত ও ব্যাপক পঠিত কিতাব। যাতে শুধুমাত্র কুরআন এর আয়াত, সহীহ ও হাসান হাদিস সন্নিবেশিত হয়েছে।
আল্লাহর রাস্তায় আফ্রিকা সফরের সময় এই কিতাবের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে জামাতের আমীরের অনুরোধে এর কার্যক্রম শুরু হয়। যা অচিরেই কিতাব আকারে প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।
মানব সংশ্লিষ্ট সকল কাজের মতই এতে ভুল থাকাই স্বাভাবিক। তাই এর সংশোধনের সাহায্য প্রত্যাশী। অবশ্য আল্লাহই প্রকৃত সাহায্যকারী ------লেখক।
ইকরামুল মুসলিমিন:মুসলমানদের সাহায্য করার ফযিলত
- মুসলমান ভাইদের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাত করা। (মুন্তাখাব: হা-৪৩)
- ইমান ওয়ালারা অত্যন্ত নম্র স্বভাবের হয়। (মুন্তাখাব: হা-৫০)
- এই পরিমাণ বিনয়ী হবে যেন কাহারো উপর গর্ব/ জুলুম না করা হয়। (মুন্তাখাব: ৫২)
- অহংকার না করা অন্যথায় আল্লাহ নিচু (মুন্তাখাব: অপদস্থ) করবনে। (মুন্তাখাব: ৫৩)
- অণু পরিমাণ অহংকার নিয়েও কেহ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (মুন্তাখাব: ৫৪)
- কোন মানুষের সম্মানে না দাঁড়ানো। (মুন্তাখাব: ৫৫)
- কাহারো দ্বারা শারীরিক কষ্ট পেয়ে তাকে মাফ করে দিলে আল্লাহ তার ১টি মর্যাদা বাড়াবেন ও ১টি গুনাহ মাফ করবেন। (মুন্তাখাব: ৫৭)
- ওজর(অজুহাত/অব্যাহতি) কারীর ওজর কবুল করা । (মুন্তাখাব: ৫৮)
- সবচেয়ে সম্মানী ওই ব্যক্তি যে কারো ক্ষতিতে প্রতিশোধ নিতে পারলেও ক্ষমা করে। (মুন্তাখাব: ৫৯)
- নিজ খাদেম (অধীনস্থ/চাকর) দৈনিক ৭০ বার ভুল করলেও তাকে ৭০ বারই ক্ষমা করা। (মুন্তাখাব: ৬০)
- বেচাকেনা বা লেনদেনে ধনীদের সময় দেয়া ও গরীবদের মাফ করা। (মুন্তাখাব: ৬১,৬২)
- হুজুর (সা:) ১০ বছরে তাঁর খাদেম আনাস (রা:) কে একবারও ‘উহঃ’ বলেন নাই। কখনও বলেনাই ‘এটা কেন করছে?’ । (মুন্তাখাব: ৬৩)
- গোস্বা করিও না। (মুন্তাখাব: ৬৪)
- শক্তিশালী ঐ ব্যক্তি যে গোস্বার সময়ও মাফ করে। (মুন্তাখাব: ৬৫)
- রাগ অবস্থায় দাঁড়ানো থাকলে বসা আর বসা থাকলে শোয়া। (মুন্তাখাব: ৬৬)
- গোস্বায় চুপ থাকা। (মুন্তাখাব: ৬৭)
- গোস্বায় ওযু করা। (মুন্তাখাব: ৬৮)
- গোস্বার ঢোক পান করা আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। (মুন্তাখাব: ৬৯)
- গোস্বা থাকা সত্ত্বেও যদি কেহ একে দমন করে, রোজ হাশরে আল্লাহ বলবেন তুমি যেকোনো হুরকে বেছে নাও। (মুন্তাখাব: ৭০)
- ২টি অভ্যাস আল্লাহর অতি প্রিয়। বিনয় ও ধৈর্য।আর তাড়াহুড়া করে কাজ না করা। (মুন্তাখাব: ৭২)
- নম্রতা অবলম্বন কর। (মুন্তাখাব: ৭৩/৭৮)
- রোগ ব্যাধিতে সবর কর। (মুন্তাখাব: ৭৯-৮১)
- মানুষ এর সাথে চলতে গিয়ে কষ্ট স্বীকারকারী মুমিন ঐ মুমিন হতে উত্তম যে লোক সমাজ এড়িয়ে চলে। (মুন্তাখাব: ৮২)
- বিক্রিত মাল ফেরত লেনে ওয়ালার দোষ ত্রুটি আল্লাহ মাফ করে দিবেন। (মুন্তাখাব: ৮৫)
- যে মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি মাফ করে আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি মাফ করেন। (মুন্তাখাব: ৮৬)
- মুমিন গণ পরস্পর ভাই ভাই। (সুরা হুজরাত)
- পুরুষ/নারীদের (তাদের ত্রুটির কারণে) উপহাস না থাকা। (সুরা হুজরাত)
- খোঁটা না দেয়া। । (সুরা হুজরাত)
- কাওকে মন্দ(অপছন্দনীয়) নামে না ডাকা। (সুরা হুজরাত)
- কাহারও দোষ খুঁজিও না। (সুরা হুজরাত)
- একজন অপরজনের গীবত করিও না। (সুরা হুজরাত)
- তোমরা ইনসাফের উপর থাক।(সুরা নিসা)
- আল্লাহর জন্য সত্য সাক্ষ্য দাও যদিও তোমাদের নিকটজনের কষ্ট হয়।(সুরা নিসা)
- কেও সালাম দিলে তাকে এর থেকেও (অতিরিক্ত) উত্তম শব্দ দ্বারা জবাব দাও। (সুরা নিসা)
- পিতা মাতার সহিত সদ্ব্যবহার কর। তাহাদেরকে 'উহঃ' শব্দও বলিও না। অত্যন্ত নম্রতা ও আদবের সহিত কথা বলিও। তাহাদের সামনে নত হইয়া থাকিও। (সুরা বনী ইসরাইল)
- মুসলমান এর ৬টি হক:
- সালাম এর ব্যাপক প্রচলন কর তাহলে পারষ্পরিক সম্পর্ক উন্নত হবে। সালাম পরিচয়ের ভিত্তিতে নয় বরং ইসলাম এর কারণে করা। (মুন্তাখাব: ৮৯, ৯০)
- আগে সালাম কারী উত্তম। এবং অহংকার মুক্ত। (মুন্তাখাব: ৯৪, ৯৫)
- ঘরে প্রবেশ বা বাহির হতে সালাম দেয়া বরকত এর কারণ। (মুন্তাখাব: ৯৩, ৯৭)
- মজলিসের বাইরে বর কত ষোলশ দয়ও। (মুন্তাখাব: ৯৮)
- ছোট বড়কে, পথচারী বসাকে, কমসংখ্যক বেশি সংখ্যক কে সালাম দেয়া উচিত। (মুন্তাখাব: ৯৯)
- ঘরে ঢুকে এমনভাবে সালাম করা যাতে ঘুমন্ত লোক জাগ্রত না হয়। (মুন্তাখাব: ১০০)
- সর্বাপেক্ষা কৃপণ সে, যে সালামে কৃপণ। (মুন্তাখাব: ১০২)
- সালাম এর পরিপূর্ণতা মুসাহাফায়(দুই হাত মিলানোয়)। এতে গুনাহ মাফ হয়। (মুন্তাখাব: ১০৩-১০৬)
- কারও ঘরে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নেয়া। কিন্তু দরজার আশপাশ দাঁড়ানো (মুন্তাখাব: বরাবর নয়)। (মুন্তাখাব: ১০৮-১১)
- অন্যের নির্ধারিত জায়গায় না বসা। (মুন্তাখাব: ১১২, ১১৩)
- দুই ব্যক্তির মাঝে অনুমতি ব্যতীত না বসা। (মুন্তাখাব: ১১৪)
- মজলিস এর মাঝখানে না বসা। (মুন্তাখাব: ১১৫)
- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। মেহমানের মেহমানদারী করে। ভাল কথা বলে অন্যথা চুপ থাকে। (মুন্তাখাব: ১১৬, ১১৭)
- ঘরে যা আছে তা দিয়েই মেহমানদারী করা। (মুন্তাখাব: ১১৮)
- হাঁচির জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। এটা তার হক। (মুন্তাখাব: ১১৯)
- অসুস্থকে দেখা আর জানাযায় শরীক হওয়া উচিত। (মুন্তাখাব: ১২০, ১২১, ১৩১-১৩৩)
- বিপদ গ্রস্তকে সান্ত্বনা দিলে তার মতই সাওয়াব হবে। (মুন্তাখাব: ১৩৪)
- কোন মুমিন এর মুছিবতে তাঁকে সবর ও শান্ত থাকতে বলনে ওয়ালাকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন ইজ্জতের পোশাক পড়াবেন। (মুন্তাখাব: ১৩৫)
- কেও মারা গেলে দোয়া করা কিন্তু কান্নাকাটি(আওয়াজ/বিলাপ) না করা। (মুন্তাখাব: ১৩৬)
- কোন মুসলমানের অনুপস্থিতে তার জন্য দোয়া করলে তা কবুল হয় এবং দুয়া করনে ওয়ালাও সমান সওয়াব পায়। (মুন্তাখাব: ১৩৭)
- কোন মুসলমানের জন্য তাহাই পছন্দ করা যা নিজের জন্য পছন্দ কর। সেই পূর্ণ মুমিন ও জান্নাতি। (মুন্তাখাব: ১৩৮)
- ***শাসক এর হক***
- ***মুসলমানরে হক***
- লোকেরা ভাল ব্যাবহার করলে তুমিও ভাল ব্যাবহার করবে। কিন্তু তারা খারাপ ব্যাবহার করলে তুমি ভাল ব্যাবহারই করবে। (মুন্তাখাব: ১৪২)
- ব্যক্তিগত কারণে প্রতিশোধ না নেয়া। (মুন্তাখাব: ১৪৩)
- ঋণ গ্রস্ত ব্যক্তিকে ঋণ আদায়ে সময় দেয়া। (মুন্তাখাব: ১৪৫)
- তিন ব্যক্তিকে সম্মান করা যেন আল্লাহকেই সম্মান করা। (ক) বৃদ্ধ মুসলমান (খ) হাফিজ (গ) ন্যায়পরায়ন বাদশাহ। (১৪৬)
- বাদশাহকে ইকরাম (সাহায্য) করা। তার কথা মানা । (মুন্তাখাব: ১৪৭)
- বড়দের সম্মান করা। তাদরে সাথেই বরকত। (মুন্তাখাব: ১৪৮)
- যে বড়দের সম্মান, ছোটদের মহব্বত, আলেমকে ইজ্জত করেনা সে রসুলের উম্মত নয়। (মুন্তাখাব: ১৪৯, ১৫০)
- নেক লোকদের ভুল ত্রুটি মাফ করা(এড়িয়া যাওয়া)। (মুন্তাখাব: ১৫১)
- আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত মানুষকে বণ্টন করতে থাক অন্যথায় নেয়ামত উঠিয়ে নেয়া হবে। (মুন্তাখাব: ১৫৪)
- মুসলিম ভাই এর জন্য মুচকি হাঁসি সদকা। অন্যকে নেক কাজে লাগানো সদকা। খারাপ কাজ থেকে ফিরানো সদকা। পথভ্রষ্ট কারোকে পথ দেখানো সদকা। দুর্বল দৃষ্টি
- সম্পন্ন লোককে পথ দেখানো সদকা। রাস্তা থেকে কষ্ট দায়ক বস্তু সরানো সদকা। অন্যের বালতিতে পানি দেয়া সদকা। (মুন্তাখাব: ১৫৫)
- ইবন আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত আপন ভাইয়ের কোন কাজ করার জন্য পায়ে হাঁটিয়া যাওয়া ১০ বছর এর ইতেকাফ এর সমান নেকী রাখে। (মুন্তাখাব: ১৫৬)
- মুসলমান ভাইকে বেইজ্জতি থেকে রক্ষা কর। অন্যথায় আল্লাহ তোমার বেইজ্জতির সময় সাহায্য করবেন না। (মুন্তাখাব: ১৫৭)
- মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয়ে বা সমস্যার সমাধানে চিন্তা ফিকির করা। অন্যথায় সে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত নয়। সকাল বিকাল আল্লাহ, তার রসুল, ইমাম(নেতা) ও সাধারণ মুসলমানদের জন্য কল্যাণ কামী
- হওয়া। (মুন্তাখাব: ১৫৮)
- যে ব্যক্তি কোন মুসলমান ভাই এর প্রয়োজন মিটায় আল্লাহ তাহার প্রয়োজন মিটান। (মুন্তাখাব: ১৫৯)
- আল্লাহ তায়ালা পেরেশান ও বিপদগ্রস্ত লোককে সাহায্য করা পছন্দ করনে। (মুন্তাখাব: ১৫০)
- যে অন্যকে মহব্বত করে অন্যরাও তাহাকে মহব্বত করে। (মুন্তাখাব: ১৫১)
- এক মুমিন অপর মুমিনের ভাই। তাহার লোকসান রুখিয়া রাখে। সর্বদিক হতে তাহার হিফাজত করে। (মুন্তাখাব: ১৫৩)
- মুসলমান ভাইকে সর্বাবস্থায় সাহায্য করা। জালিম হলে জুলুম থকে ফিরানো। (মুন্তাখাব: ১৫৪)
- তোমরা জমিন বাসীর উপর রহম করো। আল্লাহ তোমাদের উপর রহম করবেন। (মুন্তাখাব: ১৫৫)
- মুসলমানের গোপন কথা কাওকে না জানানো। কিন্তু না হক ভাবে খুন ও লুণ্ঠন এর খবর জানানো। (মুন্তাখাব: ১৬৬)
- মুমিন ওই ব্যক্তি যাহার ব্যাপারে মানুষ নিরাপদ থাকে। এমনকি তার জবান ও হাত হতে। (মুন্তাখাব: ১৬৭-১৬৯)
- আসঅবিয়্যাহ(স্বজনপ্রীতি) হারাম। এটা তখনই হয় যখন অন্যায় সত্ত্বেও) এর উপর নিজের লোক/কওম/এলাকাবাসীকে সাহায্য করা হয়। (মুন্তাখাব: ১৭০-১৭২)
- সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি মাকমুম অর্থাৎ পরহেজগার,গুনাহ হীন, পরিষ্কার দিল(মন) ও জবানে সত্যবাদী। (মুন্তাখাব: ১৭৩)
- কারও ব্যাপারে অন্যের কাছে শিকায়াত(বদনাম) না করা। যেন ধারনা ভাল থাকে।-(মুন্তাখাব: ১৭৪)
- কোন ব্যক্তির সম্পর্কে খারাপ কথা না বলা। (মুন্তাখাব: ১৭৭)
- মানুষ অন্যের চোখের খড়কুটাও দেখে, কিন্তু নিজের চোখের কড়িকাঠও দেখে না। (মুন্তাখাব: ১৭৮)
- মৃত ব্যক্তির গোসলের সময় জানা ত্রুটি গোপন রাখা। (মুন্তাখাব: ১৮০)
- শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন ব্যক্তি যদি কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে অন্য এলাকায় দেখা করার উদ্দেশ্যে রওনা হয় তখন আল্লাহ পথিমধ্যে একজন ফেরেশতা নিয়োগ করে দেন যে কিনা তার
- নিয়ৎ যাচাই করে। (মুন্তাখাব: ১৮১)
- আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাধারণ মুসলমানদের মহব্বত করা। তাদের খোজ খবর রাখা।(মুন্তাখাব: ১৮২-১৯৬)
- ওয়াদা পূরণ করা। (মুন্তাখাব: ১৯৭)
- কথার আমানত রক্ষা করা। (মুন্তাখাব: ১৯৮-১৯৯)
- কর্জ আদায় করা। শহীদও ঋণ না আদায়ের কারণে হাশরের দিন গ্রেফতার হবে। (মুন্তাখাব: ২০০-২০৯)
- উপকারীর শোকর করা উচিত। এহসান কারীকে উত্তম বিনিময় দেয়া। (মুন্তাখাব: ২১০-২১২)
- হাদিয়া হিসেবে দেয়া ফুল বা খুশবু (মুন্তাখাব: তুচ্ছ মনে করে) না ফিরিয়ে দেয়া। (মুন্তাখাব: ২১৩-২১৪)
- হাদিয়া গ্রহণে সতর্কতা(মুন্তাখাব: তাহকিক করা। দাতার উদ্দেশ্য ও আয় হালাল কিনা) অবলম্বন করা। (মুন্তাখাব: ২১৫)
- কন্যা সন্তানের সাথে সদ্ব্যবহার করা। (মুন্তাখাব: ২১৯)
- ***সন্তানের হক্ক***
- ***প্রতিবেশীর হক***
- ***মদিনা বাসীর হক***
- ***এতীমের হক***
- বিধবা নারী ও মিসকিনদের সাহায্য কারা। (মুন্তাখাব: ২৪৫)
- ওই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট সর্বোত্তম।
- স্বামীর হকঃ (ক) যদি আল্লাহ ব্যতীত কাওকে সিজদা জায়েজ হত তবে স্ত্রী স্বামীকে সিজদা করতে হত। (খ) যে স্ত্রী স্বামীর সন্তুষ্টি নিয়ে মারা যায় তার জন্য জান্নাত (গ) স্ত্রীদের উচিত স্বামীর বিছানায়
- অন্যকে না বসানো অর্থাৎ খিয়ানত না করা। বাকি আল্লাহু আলম) (ঘ) স্বামীর ঘরে স্বামীর অনুমতি ব্যতীত কাওকে না ঢুকানো। (মুন্তাখাব: ২৪৯-২৫১)
- শ্রমিকের ঘাম ঘাম শুকানোর আগে পাওনা (সময়মত মজুরী) দিয়ে দেয়া।
- পিতা জান্নাতের একটি দরজা। তার অনুগত থেকে একে রক্ষা করা চাই। (মুন্তাখাব: ২৫৩-৫৫)
- সবচেয়ে বড় নেকী গুলার একটি এই যে পিতার মৃত্যুর পর তার নিকটজনদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা। (মুন্তাখাব: ২৫৫)
- পিতা, মাতা ও আত্মীয়দের সহিত সম্পর্ক বজায় রাখার দ্বারা আয়ু ও রিজিক বৃদ্ধি পায়। (মুন্তাখাব: ২৫৭)
- পিতা বা মাতার উভয়কে বা একজনকে পেয়েও অন্যায় আচরণ করলে জাহান্নাম অবধারিত। (মুন্তাখাব: ২৬০)
- পিতা বা মাতার উভয়কে বা একজনকে পেয়েও যে তাদের সেবার দ্বারা জান্নাত অর্জন করল না তার জন্য লাঞ্চনা। (মুন্তাখাব: ২৬১)
- মাতার হক ১ম, ২য়, ৩য় পর্যায়ের। পিতার হক ৪র্থ তম। (মুন্তাখাব: ২৬২)
- নারীর উপর সবচেয়ে বেশি হক স্বামীর। পুরুষের উপর সবচয়ে বেশি হক মাতার। (মুন্তাখাব: ২৬৫)
- মা বা খালার সেবার দ্বারা তওবা কবুল হয়। (মুন্তাখাব: ২৬৬)
- আত্নীয়তা নেক হায়াত বাড়ায়। সদকা আল্লাহর গোস্বাকে ঠান্ডা করে। আত্নীয়দের হক হল তাদের ইকরাম(উপকার) করা বা খোজ খবর রাখা। (মুন্তাখাব: ২৬৭)
- যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ইমান রাখে সে যেন (ক) মেহমানের মেহমানদারী করে (খ) আত্নীয়তা বজায় রাখে (গ) আত্নীয়দের সাথে ভাল ব্যাবহার করে (ঘ) হয় কল্যানের কথা বলে নতুবা চুপ
- থাকে। (মুন্তাখাব: ২৬৮)
- আত্নীয়তা রিজিক প্রসস্থ করে ও হায়াৎ বাড়ায়।
- রেহেম(গর্ভনাড়ি/নাড়ি) অর্থাৎ আত্মীয়তা আল্লাহর নাম ‘রহমতের’ একটি শাখা এবং এর ছিন্নকারীর জন্য জান্নাত হারাম। (মুন্তাখাব: ২৭০)
- ঐ ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষাকারী নয় যে সমান সমান আচরণ করে। বরং সেই রক্ষাকারী, যে আত্মীয়তা ছিন্নকারীর সাথে আত্মীয়তা রক্ষা করে।
- তোমারা নিজ নিজ বংশ পরিচয় আহরণ কর যেন আত্মীয়দের চিনতে পার। (মুন্তাখাব: ২৭২)
- রসুলুল্লাহ (সা:) এর ৭টি নসিহত: (ক) মিসকিনদের সাথে ভাল ব্যাবহার কর (খ) আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার (গ) নীচের লোকদের দিকে লক্ষ রাখা (ঘ) উপররে লোকদের দিকে নজর না দেয়া (ঙ) সওয়াল
- না করা (চ) হক কথা বলা (ছ) আল্লাহর পয়গাম পৌঁছানোর ব্যাপারে ভয় না করা (জ) ‘লা হাওলা ওলা কু ওয়াতা’ বেশি বেশি পড়া। (মুন্তাখাব: ২৭৩)
- মিথ্যা অপবাদ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। (সুরা আহযাব-৫৮)
- মাপে কম দেয়ার জন্য রয়েছে আখিরাতে কঠিন শাস্তি। (সুরা মুতাফফিফীন-৪০১)
- যে ব্যক্তি মুসলমানদের দোষ ত্রুটি তালাশ করে সে তাদের বিগড়ায়ে(মুন্তাখাব: নষ্ট করে) দেয়। (মুন্তাখাব: ২৭৩)
- যে ব্যক্তি মুসলমানদের দোষ ত্রুটির পিছনে পড়ে আল্লাহ তাদের দোষ ত্রুটির পিছনে পরেন এবং তা প্রকাশ করে তাদের বেইজ্জত করেন।
- যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয় সে জিহাদের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। (মুন্তাখাব: ২৭৯)
- প্রকৃত নিঃস্ব ঐ ব্যক্তি যার অন্যায় আচরণের কারণে তাঁর বিশাল নেকিও বরবাদ হয় অতঃপর অন্যের গুনাহ বহন করে নিয়ে জাহান্নামে যায়। (মুন্তাখাব: ২৮১)
- কোন মুসলমানকে গালি দেয়া বদ দ্বীনি এবং তাঁকে হত্যা করা কুফরি ও ধংসাত্মক। (মুন্তাখাব: ২৮২)
- কেও তোমার দোষ বলে (প্রচার) করে লজ্জা দিলে তুমি তাঁর দোষ প্রচার করে লজ্জা দিবেনা। লজ্জা দাতা মন্দ পরিণতি ভোগ করবে।
- আবু বকর (রা:) কে কেও গালি দিচ্ছিল। যতক্ষণ তিনি চুপ ছিলেন ততক্ষণ ফিরিশতারা উনার পক্ষ থেকে জবাব দিচ্ছিলি, রসুলুল্লাহ (সা:) হাসছিলেন এবং শয়তান দূরে ছিল। (মুন্তাখাব: ২৮৬)
- কারও পিতা মাতাকে গালি দেয়া কবিরা গুনাহ। আর এর দ্বারা (প্রতিক্রিয়ায়) নিজের পিতা মাতাকেই গালি দেয়া হয়। (মুন্তাখাব: ২৮৭)
- মুসলমান মৃতদের গুন গুলোই শুধু আলোচনা করা। দোষ নয়। (মুন্তাখাব: ২৯০)
- নিকৃষ্টতম সুদ হল মুসলমানদের ইজ্জত নষ্ট করা। (মুন্তাখাব: ২৯২)
- মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে (নিত্যপ্রয়োজনীয়) খাদ্য দ্রব্য মজুদ রাখা (কবিরা) গুনাহ। মজুদদারের জন্য রয়ছে কুষ্ঠ ও অভাব। (মুন্তাখাব: ২৯৪-৫)
- ইমান ওয়ালার জন্য জায়েজ নয় যে, অন্য ভাইয়ের দাম দস্তুরের উপর/সময় দাম দস্তুর করে। (মুন্তাখাব: ২৯৬)
- যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করে সে আমাদের নয়। অস্ত্র দ্বারা ইশারা না করা অন্যথায় অভিসম্পাত।-(মুন্তাখাব: ২৯৭-৮)
- বিক্রীত শস্যের দোষ গোপনকারী রসুলের অনুসারী নয়। (মুন্তাখাব: ৩০০)
- যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তাঁর ইজ্জত সম্মান রক্ষা করে চলে আল্লাহ তাঁকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। (মুন্তাখাব: ৩০২-৩)
উদ্যোক্তাঃ শাইখ মুস্তাফিজুর রহমান(আমীর) ও উগান্ডা জামাত (২০১৮), কামপালা, উগান্ডা।
লেখক, সংগ্রাহক, সংক্ষেপক ও পরিমার্যকঃ আবু উবাইদা।
সূত্রঃ
১) মুন্তাখাব হাদীস, মুহাম্মদ ইউসুফ বিন ইলিয়াস কান্দলভী। আমীর(২য়), তাবলীগ জামাত।*****************************************************************
কুরয়ানের আলোকে "বান্দার হক"
- কথাবার্তায় কর্কশ হবেন না। (০৩:১৫৯)
- রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন (০৩:১৩৪)।
- অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। (০৪: ৩৬)
- অহংকার করবেন না। (০৭: ১৩)
- অন্যকে তার ভুলের জন্য ক্ষমা করুন (০৭: ১৯৯)
- লোকদের সাথে ধীরস্থির হয়ে শান্তভাবে কথা বলুন। (২০: ৪৪)
- উচ্চস্বরে কথা বলবেন না। (৩১: ১৯)
- অন্যকে উপহাস করবেন না (৪৯: ১১)
- পিতামাতার প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করুন। (১৭: ২৩)
- পিতামাতার প্রতি অসম্মানজনক শব্দ উচ্চারণ করবেন না। (১৭: ২৩)
- অনুমতি না নিয়ে পিতামাতার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করবেন না। (২৪: ৫৮)
- ঋণ গ্রহণ করলে তা লিখে রাখুন। যদিও তা আপনার নিকট অপ্রিয় হয়। (০২: ২৮২)
- কাউকে অন্ধভাবে অনুসরণ করবেন না। (০২: ১৭০)
- ঋণ গ্রহণকারীর কঠিন পরিস্থিতিতে পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দিন। (২: ২৮০)
- কখনো সুদের সাথে জড়িত হবেন না। (০২: ২৭৫)
- কখনো ঘুষের সাথে জড়িতে হবেন না। (০২:১৮৮)
- প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না। (০২
- আস্থা রাখুন (০২: ২৮৩)
- সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করবেন না। (২:৪২)
- ইনসাফের সাথে বিচার করবেন। (০৪: ৫৮)
- ন্যায়বিচারের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে যান। (০৪: ১৩৫)
- মৃতদের সম্পদ তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুষ্ঠভাবে বিতরণ করুন। (০৪: ০৭)
- মহিলাদের উত্তরাধিকারের অধিকার আদায় করুন। (০৪: ০৭)
- এতিমদের সম্পত্তি গ্রাস করবেন না। (০৪
- এতিমদের রক্ষা করুন। (০২
- অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করবেন না। (০৪: ২৯)
- মানুষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করুন। (৪৯: ০৯)
- সন্দেহ এড়িয়ে চলুন। (৪৯: ১২)
- অন্যের দোষ অন্বেষণ করবেন না, কুৎসা রটাবেন না। (৪৯: ১২)
- আল্লাহর বিধানুসারে বিচার করুন। (০৫: ৪৫)
- সাদাকাতে সম্পদ ব্যয় করুন। (৫৭:০৭)
- দরিদ্রকে খাবার খাওয়ান। (১০৭: ০৩)
- অভাবীকে অভাব পূরুনের উপায় বাতলে দিন। (০২: ২৭৩)
- অপব্যয় করবেন না। (১৭: ২৯)
- খোঁটা দিয়ে দানকে নষ্ট করে দিবেন না। (০২: ২৬৪)
- অতিথিকে সম্মান করুন। (৫১: ২৬)
- কেবলমাত্র নিজে আমল করে তারপর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যকে আমল করার আদেশ দিবেন। (০২:৪৪)
- কাউকে গালাগালি করবেন না। (০২: ৬০)
- লোকজনকে মসজিদে যেতে বাধা দিবেন না। (০২: ১৪৪)
- কেবল তাদের সাথেই লড়াই করুন, যারা আপনার সাথে লড়াই করে (০২: ১৯০)
- যুদ্ধের শিষ্টাচার মেনে চলুন। (০২: ১৯১)
- আক্রমনাত্নক হবেন না। (০৮:১৫)
- দ্বীন নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। (০২: ২৫৬)
- সকল নবির উপর ঈমান আনুন। (২: ২৮৫)
- স্ত্রীর মাসিকের সময় যৌন মিলন করবেন না। (০২: ২২২)
- আপনার শিশুকে পূর্ণ দুবছর বুকের দুধ খাওয়ান। (০২: ২৩৩)
- অননুমোদিত উপায়ে যৌন মিলন করবেন না। (১৭: ৩২)
- যোগ্যতা অনুসারে নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পণ করুন। (০২: ২৪৭)
- কোনো ব্যক্তিকে সামর্থ্যের বাহিরে বেশি বোঝা চাপিয়ে দিবেন না। (০২: ২৮৬)
- (উম্মতের মাঝে) বিভক্তি উসকে দিবেন না। (০৩: ১০৩)
- মহাবিশ্বের বিস্ময় ও সৃষ্টি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করুন (৩: ১৯১)
- আমল অনুযায়ী পুরুষ ও মহিলাদের সমান পুরষ্কার পাবেন; তাই আমল করুন। (৩: ১৯৫)
- 'মাহরাম' আত্মীয়কে বিবাহ করবেন না। (০৪: ২৩)
- পুরুষ হিসেবে মহিলাদের সুরক্ষা দিন। (০৪: ৩৪)
- কৃপণ হবেন না । (০৪: ৩৭)
- অন্তরে পরশ্রীকাতরতা পুষে রাখবেন না। (০৪: ৫৪)
- একে অপরকে হত্যা করবেন না। (০৪: ৯২)
- প্রতারণার পক্ষে ওকালতি করবেন না। (০৪: ১০৫)
- পাপ কাজে এবং আগ্রাসনে সহযোগিতা করবেন না। (০৫:০২)
- সৎ কাজে সহযোগিতা করুন। (০৫: ০২)
- সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই কোনোকিছু সত্য বলে গ্রহণ করবেন না। ( ০৬: ১১৬)
- ন্যায়বিচার করুন। (০৫: ০৮)
- অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। (০৫: ৩৮)
- পাপ ও বেআইনী কাজের বিরুদ্ধে লড়াই করুন (০৫: ৬৩)
- মৃত প্রাণী, রক্ত, শুকরের মাংস ভক্ষণ থেকে দূরে থাকুন। (০৫: ০৩)
- মাদক এবং মদ এড়িয়ে চলুন (৫:৯০)
- জুয়া খেলবেন না। (০৫: ৯০)
- অন্য ধর্মের দেবদেবীদের অবমাননা করবেন না। (০৬: ১০৮)
- ক্রেতাকে ঠকানোর উদ্দ্যেশ্যে মাপে কম দিবেন না। (০৬: ১৫২)
- খান এবং পান করুন; তবে অপচয় করবেন না। (০৭: ৩১)
- নামাজের সময় ভালো পোশাক পরিধান করুন। (০৭: ৩১)
- আশ্রয়প্রার্থীকে সুরক্ষা দিন, সহযোগিতা করুন। (০৯: ০৬)
- বিশুদ্ধতাকে আঁকড়ে ধরুন। (০৯: ১০৮)
- আল্লাহর রহমতের আশা কখনই পরিত্যাগ করবেন না। (১২: ৮৭)
- অজ্ঞতাবশত ভুল করলে আল্লাহর ক্ষমা প্রত্যাশা করুন। ( ১৬: ১১৯)
- মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করুন হিকমা ও উত্তমভাবে। (১৬: ১২৫)
- অন্যের পাপের বোঝা কাউকে বইতে হবে না, বিশ্বাস করুন। (১৭: ১৫)
- দারিদ্র্যের ভয়ে (ভ্রূণ বা নবাগত) সন্তান হত্যা করবেন না। (১৭: ৩১)
- যে বিষয়ে জ্ঞান আপনার জ্ঞান নাই, সে বিষয়ে কারও পিছু লাগবেন না। (১৭: ৩৬)
- নিরর্থক কাজ থেকে দূরে থাকুন। (২৩: ০৩)
- অনুমতি না নিয়ে অন্যের বাড়িতে প্রবেশ করবে না।