আম্বার মাছ (তিমি) বা Sperm Whaleঃ যে মাছের পেটে নবী ইউনুছ (আঃ) ছিলেন

 

ইউনুস আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মাছের ঘটনাঃ

আল্লাহ বলেন: “আর নিশ্চয় ইউনুসও ছিল রাসূলদের একজন। যখন সে একটি বোঝাই নৌযানের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল।” {সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১২৯-১৪০}
আল্লাহ তাঁর বেরিয়ে যাওয়াকে পালানো বলেছেন যেভাবে গোলাম তার মুনিবকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। কারণ তিনি আল্লাহর অনুমতি ছাড়াই জনপদ থেকে বেরিয়েছিলেন। পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন: “অতঃপর সে লটারিতে অংশগ্রহণ করল এবং তাতে সে হেরে গেল।” {সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১৪১}
এরপর তাকে সাগরে নিক্ষেপ করা হলো। আল্লাহ বলেন: “তারপর বড় মাছ তাকে গিলে ফেলল। আর সে (নিজেকে) ধিক্কার দিচ্ছিল।” {সূরা সাফফাত, আয়াত: ১৪২}
 
বিদ্রঃ তাফসিরে বলা হয়েছে মাছটি ছিল আম্বার তিমি মাছ। সমূদ্রটি ছিল মেডিটেরিয়ান/ভূমধ্যসাগর সাগর। আর তিনি তিমির পেটে ৩ বা ৭ বা ৪০ দিন ছিলেন। 

 


আবু উবাইদা রদিয়াল্লাহু আনহুর ৩০০ সাহাবার জামাত ও আম্বার মাছের ঘটনাঃ

(বাংলা অনুবাদ) আবু আব্দুল্লাহ জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে (এক অভিযানে) পাঠালেন এবং আবু উবাইদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে আমাদের নেতা বানালেন। (আমাদেরকে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল,) আমরা যেন কুরাইশের এক কাফেলার পশ্চাদ্ধাবন করি। তিনি আমাদেরকে পাথেয় সবরূপ এক থলি খেজুর দিলেন। আমাদেরকে দেওয়ার মত এ ছাড়া অন্য কিছু পেলেন না। সুতরাং আবু উবাইদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে একটি একটি করে খেজুর দিতেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনারা সেটা দিয়ে কী করতেন?’ তিনি বললেন, আমরা তা বাচ্চার চুষার মত চুষতাম, তারপর পানি পান করতাম। সুতরাং এটা আমাদের জন্য সারাদিন রাত পর্যন্ত যথেষ্ট হত। আর আমরা লাঠি দ্বারা গাছের পাতা ঝরাতাম, তারপর তা পানিতে ভিজিয়ে খেতাম। 
 
আমরা (একবার) সমুদ্র উপকূলে পথ চলছিলাম, অতঃপর সমুদ্রতীরে বালির বড় ঢিবির মত একটি জিনিস দেখতে পেলাম। এরপর তার কাছাকাছি এসে দেখলাম যে, একটা বড় জন্তু, যাকে আম্বার (মাছ) বলা হয়।’ 
 আবু উবাইদাহ বললেন, এটা তো মৃত (ফলে তা আমাদের জন্য অবৈধ)।’ পুনরায় তিনি বললেন, না (অবৈধ নয়) বরং আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূত এবং আল্লাহর পথে (বের হয়েছি) আর তোমরা (এখন) নিরুপায়, সেহেতু খাও।’ সুতরাং আমরা তিনশ’জন লোক একমাস তারই দ্বারা জীবনধারণ করলাম, এমনকি শেষ পর্যন্ত আমরা মোটা হয়ে গেলাম। আমরা ঐ জন্তুর চোখের গর্ত থেকে ঘড়া ঘড়া তেল বের করতাম এবং বলদের মত মাংসের ফালি কাটতাম। একদা আবু উবাইদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদের মধ্য হতে তেরো জনকে নিয়ে ঐ মাছের একটি চোখের কোটরে বসিয়ে দিলেন। আর তার পাঁজরের একখানি হাড় নিয়ে দাঁড় করালেন। অতঃপর তিনি আমাদের সব চেয়ে বড় উটটার উপর হাওদা চাপিয়ে তার নীচে দিয়ে পার করে দিলেন। আমরা তার মাংস ফালি পাথেয় স্বরূপ সাথে নিলাম। অতঃপর যখন আমরা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এবং তাঁর কাছে ঐ মাছের কথা আলোচনা করলাম, তখন তিনি বললেন, তা জীবিকা ছিল, যা আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য বের করেছিলেন। আমাদেরকে খাওয়ানোর মত তোমাদের কাছে তার কিছু মাংস আছে কি?’’ (এ কথা শুনে) আমরা তাঁর নিকট কিছু মাংস পাঠালাম, সুতরাং তিনি তা ভক্ষণ করলেন। [মুসলিম ১৯৩৫, বুখারি ২৪৮৩, ৫২৪৩, তিরমিযি ২৪৭৫, নাসায়ি৪৩৫১, ৪৩৫২, ৪৩৫৩, ৪৩৫৪, আবু দাউদ ৩৮৪০, ইবন মাজাহ ৪১৫৯, আহমদ ১৩৮৪৪, ১৩৮৭৪, ১৩৯০৩, ১৩৯২৬, ১৪৬২৯, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৩০, দারেমি২০১২] 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন