বাংলাদেশে ঈদের চাঁদ দেখাঃ একটি বিতর্কের অবসান

 

 
চাঁদ প্রথম দেখা যায় আরবের মক্কা এলাকা থেকে। মক্কার চাঁদ প্রায় সমগ্র আরবেই দেখা যায়। এমনি তা আরবের বাইরে মিসর, ইরাক, ইরান, তুর্কি ও খোরাশানের অনেক এলাকায়ও দেখা যায়।
অতঃপর তা পশ্চিমে হেলতে বা যেতে থাকে। মিসর, মরক্কো, ফ্রান্স, আমেরিকা, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও হিন্দুস্তান হয়ে তা আরবে এসে পৌছায়। সাধারণত ১৬-১৭ ঘণ্টা পর বাংলার আকাশে এসে পৌছায়। প্রথম রাতের চাঁদ ১০-১৫ মিনিটের মত দৃশ্যমান থাকে।
 
মেঘলা আকাশের কারণে এই উপকূলীয় এলাকায় প্রথম চাঁদ সাধারণত দেখা যায় না। কিন্তু বাংলার বাইরে উপমহাদেশের(হিন্দুস্তান, বার্মা, মালয়শীয়া) কোথাও কোথাও না কোথাও চাঁদ দেখা যাবেই। 
 
তাই যারা মক্কার (সউদির) সাথে মিল রেখে মিল রেখে একই দিন রোজা বা ঈদ শুরু করেন তারা আসলে চাঁদ আসার এক দিন আগেই করেন। আর যারা দুই দিন পর করেন তারা ১ দিন পরই করেন। অর্থাৎ একই দিন বা দুই দিন পর যারা রোজা/ঈদ শুরু করেন তারা ভুল করেন।
 

চাঁদ দেখা যাওয়া কি জরুরী?

অবশ্যই কিন্তু সেটা একটা ভৌগলিক এলাকা ভিত্তিক হওয়া চাই।
দেশ বা ক্ষুদ্র অঞ্চল ভিত্তিক নয়। যেমন বাংলাদেশ। বা জেলা ভিত্তিক নয়।
যেমন রাশিয়া এত বড় দেশ যারা একদিনে ঈদ/রোজা শুরু করা উচিত নয়।
আর চাঁদ এক সাথে সব জেলায় নাও দেখা যেতে পারে। যেমন, চট্টগ্রামে চাঁদ দেখা গেল কিন্তু ঢাকায় দেখা গেল না তাহলে কি শুধু চট্টগ্রাম বাসীই রোজা বা ঈদ করবে?
 

যারা নিজ দেশে চাঁদ না দেখে ঈদ করার বিপক্ষে

 যদি আপনি মনে করেন চাঁদ এদেশে না দেখে ঈদই করব না। তবে আপনাকে এটাও মনে রাখতে হবে আপনার বিলাদ বা দেশ কিন্তু জিলাও। মানে আপনার জেলা বা উপজেলায় যদি চাঁদ দেখা যায় তবেই আপনি রোজা শুরু বা ঈদ করতে পারেন। অন্য জেলায় দেখা গেছে কিন্তু আপনার জেলায় নয়। তবে আপনার মত অনুযায়ী আপনি ঈদ/রোজা শুরু করতে পারেন না। 

সউদি আর বাংলাদেশে কি একই দিনে রোজা শুরু বা ঈদ সম্ভব? 

উত্তরঃ সম্ভব যদি শাবান ২৯ দিনের হয় কিন্তু রমজানের ১ তারিখে প্রাকৃতিক কারণে আরবের কোথাও কোন চাঁদ না দেখা যায়। যেমন পুরো আরবের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা। অথবা অন্য কোন কারণে। অন্যদিকে বাংলাদেশে যদি মেঘ খুব পরিষ্কার থাকে আর সঠিক দিনেই চাঁদ দেখা যায়।
 
 কিন্তু বাস্তবে এটা প্রায় অসম্ভব।

মতামতঃ

তাই সংকীর্ণ মনা মুফতিদের ফতোয়ার অন্ধ অনুসরণ না করে বিজ্ঞ জ্যোতির্বিদ, আলেম ও দেশ প্রধানদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
নয়ত একগুয়ে মুফতিদের একরোখা ফতোয়া ফেতনাই তৈরি করবে।
(বিদ্রঃ কয়েক বছর আগে ঢাকার এক সংকীর্ণ মনা মুফতির ফতোয়া অনুসরণ করতে গিয়ে ইফা সারা দুনিয়ার বিজ্ঞদের কাছে হাসির পাত্র হয়। অতঃপর মাঝরাতে ইন্ডিয়া ও মায়ানমারের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে ঈদের ঘোষণা আসে।)



 

Writer: 

Amir Md. Abu Obida | আবু উবাইদা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন