উহুদে সাহাবাদের জামাত নিয়ে সাদ সাহেবের উপর তোহমত (তোহমত-৪)


আসবিয়্যাতে আক্রান্ত এক বড় আলেম বলেন  'সাদ সাব হাফিজুল্লাহ  যেহেতু আফ্রিকার ইজতেমায় বলেছেন   উহুদে 'এক হাজার কাফেলা থা সাহাবা কা', তাই উনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত থেকে বাইরে।

জবাবঃ
১) আপনি যদি ভুল ধরার নিয়তে বসেন তবে খোদ আল্লাহ বা কুরআনেরও ভুল ধরার দাবী করতে পারবেন। নাউজুবিল্লা। যেটা করেছে লেখক হুমায়ুন আহমদ ও হাজারো নাস্তিক। কিন্তু ভুল প্রমাণ করতে পারবেন না।

২) হজরত বলেছেন 'এক হাজার কাফেলা থা সাহাবা কা' এর অর্থ হল সাহাবাদের সাথে ১০০০ এর দল ছিল। উনি বলেননি '১০০০ সাহাবা থা' মানে '১০০০ সাহাবা ছিল'। এটা বুঝতে হলে একটু ভাষা জ্ঞান দরকার। আরও সহজ করি। এর সাধারণ অর্থ 'সাহাবাদের সাথে ১০০০ জনের দল ছিল'। মানে সাহাবাদের সাথে যারা ছিল তারা সবাই যে কোন মতের হতে পারে।

৩) এক ব্যক্তি সাদ সাহেবের বিরোধিতা করতে গিয়ে বলেছেন 'বাকি ৭০০ সাহাবা' ছিল। তাহলে উনার যুক্তিতে উনিও আহলে সুন্নাত থেকে বাইরে। কারণ বাকি ৭০০'র মাঝে সবাই সাহাবা ছিল না। সিহাহ সিত্তাতে এর অনেক হাদীস আছে। উহুদে ময়দানে  মদীনার বনু যাফর(بنو ظَفر) গোত্রের ‘কুযমান’ (قُزمان খুব লড়াই করল। সবাই বলল জান্নাত মুবারক। রসুলুল্লাহ বললেন 'জাহান্নামী'......(ইবনু হিশাম ২/৮৮; বুখারী হা/১; মুসলিম হা/১৯০৭; )। এরকম আরও অনেক ঘটনা আছে।

৪) এক ব্যক্তি বলেছেন যারা চলে গিয়েছিল তারা সবাই মুনাফিক। অথচ উনি জানেন না এদের অনেকেই পুনরায় ইসলামে ফিরে এসেছিল এবং সাহাবা হওয়ার জাগতিক মর্যাদা পেয়েছিল। তাহলে মুমিনকে মুনাফিক বলার কারণে উনি উনার যুক্তিতেও দেওবন্দী আলেমদের মালিকানায় থাকা 'আহলে সুন্নাত' জামাত থেকে বের হয়ে গেছেন।

৫) এটা অবশ্য হজরতের জানার কথা না। কারণ ফতুয়া পড়তে পড়তে যার দিন যায় উনিকি দ্বীন মূল সিরাত ও তারিখ পড়ার সময় পান?

উক্ত হজরত ফতুয়া বিশেষজ্ঞ হলেও মনে হয় তারিক ও সীরাত এর বড় কিতাব ভাল পড়েননি। আল্লাহু আলম। তবে উনাকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে উনিকি তারিখ 'আল বিদায়া, বাইহাকী, তারিখ আল কাবির, তারখে বাগদাদী' ও সীরাত 'ইবনে হিশাম, ইবন ইসহাক, সীরাতে নববিয়্যা বা আর রাহিকুল মাখদুম' কিতাব গুলো ৩ বার কমপক্ষে পড়েছেন?
শেষ কথাঃ কেও যদি আবেগে বা কথার জালে ফেসে গিয়ে  উহুদের '১০০০ এর কাফেলাকে সাহাবাদের জামাত'  বলে তবে তার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোন কারন নেই। অথবা কেও যদি বলে দলছুট সবাই (স্থায়ী) 'মুনাফিক ছিল' তবুও উনি আশা করি মুসলিম উম্মাহর জামাত থেকে বের হয়ে যাবেন না।  তবে হ্যা, যদি কেও  'জেনে বুঝে' বলে আব্দুল্লাহ ইবন উবাই ইমানদার ছিল এবং বুঝানোর পরও এই কথার উপর জমে থাকে তবে তার ইলম ও আকিদা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে। 

যাই হোক এগুলা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভাল। দুইজনই মানুষ, দুইজনেরই ভুল হতে পারে। অবশ্যই উনারা ভুল করেন। কিন্তু উনাদের আমল আশা করি এর থেকে অনেক বেশি। আর আমীর-উল-মুবাল্লীগিন সাদ সাহেবকে নিয়ে কথা বলার আগে উলামাদের উচির অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা। মাজহাবিয়্যা, আসবিয়্যাকে কষ্ট করে হলেও দমিয়ে রাখা। নয়ত লজ্জিত হওয়া শুধু সময়ের ব্যপার।  

বিদ্রঃ রসুলুল্লাহ ,উনার উপর শান্তি ধারা বর্ষিত হোক্‌  বলেন "যারা তোমাদের জামাতে তোমাদের কিবলার দিকে ফিরে নামাজ পড়ে তারা তোমাদেরই জামাত, তোমাদেরই অংশ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

নবীনতর পূর্বতন